ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান: মহান আল্লাহ্ তাআলার পরিচয় সম্পর্কে

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। প্রিয় পাঠক, আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো 'ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর মহান আল্লাহর পরিচয়' সম্পর্কে। আমরা সবাই জানি এই বিশ্বের একজন মহান সৃষ্টিকর্তা বা মালিক আছেন, যার হুকুমে এই বিশ্বের সবকিছু নিয়মমাফিকভাবে সর্বদা চলমান আছে। এমনকি তার হুকুমের বাহিরে এই বিশ্বের কোন গাছের একটি পাতাও নড়ে না এবং ঝড়েও পরে না। তিনি আর কেউ নন, তিনিই হচ্ছেন আমাকে মহান সৃষ্টিকর্তা তাহাকে আমরা এক আল্লাহ বলে চিনি। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাহার কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তিনি কারো থেকে জন্ম নেননি। প্রিয় পাঠক তাই আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো সাধারণ জ্ঞান: মহান আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক- 

সাধারণ জ্ঞান মহান আল্লাহর পরিচয়
সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন উত্তর মহান আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে 

 ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর 

১. আমাদের সৃষ্টিকর্তা কে?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তাআলা।

 ২. আল্লাহ কতগুলো নাম আছে?

উত্তরঃ ৯৯টি।

৩. আল্লাহ্ শব্দটি আল কুরআনে কতবার এসেছে?

উত্তরঃ ২,৬৯৯ বার।

৪. আল কুরআনের কতটি সূরায় 'আল্লাহ্' শব্দটি নেই?

উত্তরঃ ২৯টি সূরায়।

৫. আল্লাহ্ এই আকাশ ও জমিনকে কয় দিনে সৃষ্টি করেছেন?

উত্তরঃ ৬ দিনে।

৬. আল্লাহ্ নামটি আল্লাহর কেমন নাম?

উত্তরঃ যাতি বা সত্তাবাচক নাম।

৭. আল্লাহ্ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ এ শব্দটি ইসমে যাত। তাই পৃথিবীর কোন ভাষায় এর কোন অর্থ নেই এর অনুবাদও অসম্ভব। এর কোন বিকল্প শব্দ নেই।

৮. আল্লাহর নামগুলোকে আরবীতে কী বলে?

উত্তরঃ আল আসমাউল হুসনা (অতীব সুন্দর নামসমূহ)।

৯. মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কী?

উত্তরঃ মানুষ।

১০. আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি আঠার হাজার একথাটি কি ঠিক?

উত্তরঃ না, বরং এটি একটি উদ্ভট বক্তব্য।

১১. আল্লাহ তাআলা কিরূপ?

উত্তরঃ তিনি নিরাকার সত্তা, তাঁর কোন আকার-আকৃতি নেই।

১২. আল্লাহ তাআলা প্রথমে কী সৃষ্টি করেন?

উত্তরঃ রাসূল (স) এর নূরকে, অপর মতে- কলম।

১৩. আল্লাহর সাথে যারা অন্যান্য শক্তিকে শরিক করে তাদেরকে কী বলে?

উত্তরঃ মুশরিক বা অংশীবাদী।

১৪. আল্লাহ তাআলা কী কী সৃষ্টি করেছেন?

উত্তরঃ আল্লাহ তাআলা মানুষ ও জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। এই পৃথিবী, পৃথিবীর সমস্ত জীবজন্তু, কীট-পতঙ্গ, গাছ-পালা, আকাশ, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ নক্ষত্র সব কিছু আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন।

১৫. আল্লাহ্ যা যা সৃষ্টি করেছেন তার সবকিছুই কি আমরা খালি চোখে দেখতে পাই?

উত্তরঃ আল্লাহর এমন অনেক সৃষ্টি আছে, যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। এই দুনিয়ায় অনেক ছোট ছোট জীবাণু আছে যা খালি চোখে দেখা যায় না। দূরে-বহুদূরে অনেক নক্ষত্র এবং গ্রহ-উপগ্রহ আছে, যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। তাছাড়া আল্লাহ জ্বিন ও ফিরিশতা সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকেও আমরা দেখতে পাই না।

১৬. আল্লাহ সম্পর্কে আমরা আর কী কী জানি?

উত্তরঃ আল্লাহ এক। তিনি সব জায়গায় আছেন এবং সব কিছু দেখতে পান। এমনকি আমাদের মনের কথা এবং গোপন ইচ্ছাও তিনি জানতে পারেন।

১৭. আমরা কী কাজ করলে আল্লাহ তাআলা খুশী হন?

উত্তরঃ আল্লাহ চান, আমরা তাঁর হুকুম মেনে চলি। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আদেশ-নিষেধ না মানি। আমরা যেন ভাল কাজ করি এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকি। তা হলে আল্লাহ খুশী হন।

১৮. আল্লাহ কী চান, তা আমরা কিভাবে জানতে পারি?

উত্তরঃ কোন্ কোন্ কাজ করা মানুষের উচিত এবং কোন্ কোন্ কাজ করা উচিত নয় এসব কিছু আল্লাহ্ তাআলা নবী ও রাসুলদের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ্ বাণী কুরআন শরীফ। এই কুরআন শরীফের বাংলা অনুবাদ পড়ে আমরা বাংলা ভাষাভাষীরা অতি সহজেই আল্লাহ্ কী চান তা জানতে পারি।

১৯. আল্লাহকে খুশী করার জন্য রাসূল (স) আমাদেরকে কোন্ পাঁচটি কাজ করতে বলেছেন?

উত্তরঃ ১. কালিমা; ২. দৈনিক পাঁচবার সালাত; ৩. যাকাত; ৪. রমযান মাসে রোযা রাখা এবং ৫. হজ্জ পালন করতে বলেছেন।

২০. আল্লাহর উপর বিশ্বাস বলতে আমরা কী বুঝি?

উত্তরঃ আল্লাহর উপর বিশ্বাস বলতে আমরা বুঝি- আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় এবং সকল গুণাবলীর আধার একমাত্র তিনিই। আল্লাহর ক্ষমতার মত আর কারো ক্ষমতা নেই। আল্লাহর জন্ম নেই, মৃত্যুও নেই। তিনি ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন অনন্তকাল। তিনি সর্বশক্তিমান পরম দয়ালু। তারই করুণায় আমরা বেঁচে আছি। তিনি সব জায়গায় আছেন, সবকিছু জানেন।

২১. আল্লাহর সাথে আমাদের কী ধরণের সম্পর্ক হওয়া উচিত?

উত্তরঃ আল্লাহ আমাদের ও এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন। আমরা তাঁরই দয়ায় বেঁচে আছি। আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু এবং বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার, সব তিনি ব্যবস্থা করেন। আমরা আল্লাহর বান্দা বা গোলাম। তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনেই আমাদের এই দুনিয়াতে থাকতে হবে। সম্পূর্ণভাবে তাঁর হুকুম ও ইচ্ছানুযায়ী চললে আল্লাহ আমাদের উপর খুশী হবেন।

২২. আমরা আল্লাহর হুকুম ও ইচ্ছা কিভাবে জানতে পারব?

উত্তরঃ আমরা আল্লাহর হুকুম ও ইচ্ছা আল কুরআন এবং রাসূল হযরত মুহাম্মদ (স) এর শিক্ষা ও চরিত্রের মাধ্যমে জানতে পারি। রাসূল (স) তাঁর কথা ও কাজের মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে চললে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।

২৩.  আমরা আল্লাহর হুকুম ও ইচ্ছা কিভাবে জানতে পারব?

উত্তরঃ আমরা আল্লাহ্ হুকুম ও ইচ্ছা আল কুরআন এবং রাসূল হযরত মুহাম্মদ (স) এর শিক্ষা ও চরিত্রের মাধ্যমে জানতে পারি। রাসূল (স) তাঁর কথা ও কাজের মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে চললে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।

২৪. আখিরাতের উপর বিশ্বাস বলতে আমরা কী বুঝি?

উত্তরঃ এই দুনিয়ায় সকলকে একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। একদিন দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে। সে দিনের নাম কিয়ামত। বেশ কিছুকাল পরে আরম্ভহবে শেষ বিচার। সেদিন প্রত্যেক মানুষকে আবার জীবিত করা হবে এবং তাদের প্রত্যেককে দুনিয়ায় যা যা করেছে, তার বিচার করা হবে। বিচার করবেন আল্লাহ তাআলা। যে দুনিয়ায় ভাল কাজ করেছে, আল্লাহ তাআলা তাকে পুরস্কার দেবেন; আর সে পুরস্কার হলো জান্নাত। জান্নাতে সে সুখে থাকবে। আর যে দুনিয়ায় গুনাহর কাজ করেছে, আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন, তাকে দোযখের আগুনে জ্বলতে হবে।


পরিশেষেঃ 

আলোচনার পরিশেষে এসে বলা যায় যে, উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে এই পুরো বিশ্বের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান কুইজ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা সমূহের জন্য এই প্রশ্ন উত্তর গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url