ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান: পবিত্র আল কুরআন

আল কুরআন হলো ইসলাম ধর্মের পবিত্র একটি ধর্মগ্রন্থ। এটি মহান আল্লাহ তাআলার বাণী যাহা ইসলামের নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উপর দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে অবতীর্ণ হয়েছে। আল কুরআন মানব জাতির জন্য পথনির্দেশক এবং পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। আল কুরআন নামের অর্থ হল 'যাহা পঠিত হয়'। সম্পূর্ণ আল-কুরআনকে ৩০ টি পারা এবং ১১৪ টি সূরায় বিভক্ত করা হয়েছে। পবিত্র আল কুরআনের সূরাগুলো মক্কা এবং মদিনায় অবতীর্ণ হওয়ার কারণে মাক্কী ও মাদানী নামে বিভক্ত করা হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর ওফাতের পর হযরত আবু বকর রাঃ এর নির্দেশে এবং পরবর্তীতে ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান রাঃ এর তত্ত্বাবধানে আল কুরআন গ্রন্থাকারে সংকলিত হয়। 

প্রিয় পাঠক, আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো পবিত্র আল-কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন উত্তর নিয়ে। আপনারা যারা পবিত্র আল-কুরআন সম্পর্কে গভীর থেকে গভীরভাবে জানতে চান আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-

সাধারণ জ্ঞান কুইজ প্রশ্ন ও উত্তর পবিত্র আল কুরআন
ইসলামিক সাধারণ জ্ঞান: পবিত্র আল কুরআন 

 পবিত্র আল কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান 

১. আল কুরআন কী?

উত্তরঃ আল কুরআন মহান আল্লাহ তাআলার বাণী। যা হযরত জিবরাইল (আ) এর মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (স) এর কাছে সুদীর্ঘ তেইশ বছরে অবতীর্ণ হয়েছে।

২. আল কুরআন শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ যা পড়া হয় (মূল শব্দ 'কারাআ')। সুবিন্যস্ত (মূল শব্দ 'কারানা')।

৩. আল কুরআনের সুরক্ষিত স্থান কোনটি?

উত্তরঃ লাওহে মাহফুয।

৪. আল কুরআনের বিষয়বস্তু কী?

উত্তরঃ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ তথা ইসলামের সকল শিক্ষা ও বিধি-বিধান।

৫. কুরআন মাজিদে ফিরিশতাগণ ব্যতীত আর কাদের নাম উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ ১. খিযির; ২. লুকমান; ৩. তুব্বা; ৪. মারিয়াম; ৫. ইমরান; ৬. ইমরানের ভ্রাতা হারুন; ৭. ওযায়ের ও ৮. তালুত।

৬. সাহাবীদের মধ্যে কার নাম আল কুরআনে উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ হযরত যায়েদ (রা)।

৭. মন্দ ও দুষ্টচারি লোকদের মধ্যে কাদের নাম কুরআনে উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ ১. ইবলিস; ২. কারুন ও ৩. জালুত।

৮. আল কুরআনে কুনিয়াতের সাথে কার নাম উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ আবু লাহাবের নাম।

৯. আল কুরআনে উপাধির সাথে কার নাম উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ হযরত ঈসা ইবনু মারিয়াম (আ)-এর। (উপাধি মাসিহ)

১০.  আল কুরআনে পুণ্যবানদের মধ্যে কার নাম উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ ইস্কান্দার এর। (উপাধি যুলকারনাইন)

১১. আল কুরআনে মন্দ লোকদের মধ্যে কার উপাধি উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ মিশরীয় বাদশাহ ফিরাউনের।

১২. আল কুরআন কত স্থানে অবতীর্ণ হয়েছে?

উত্তরঃ ৩ স্থানে। ১. মক্কা; ২. মদিনা ও ৩. শাম।

১৩. কুরআন মজিদকে সপ্তাক্ষরে অবতীর্ণ করা হয়েছে এ হাদীসখানি কতজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন?

উত্তরঃ ২১ জন।

১৪. আল কুরআনে মানসুখ আয়াত সংখ্যা কতটি?

উত্তরঃ ৫টি।

১৫. কুরআনিক শব্দ উচ্চারণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রকারভেদ সর্বমোট কতটি এবং কী কী?

উত্তরঃ নয়টি। যেমন- ১. ইবতিদা; ২. ওয়াকফ; ৩. ইমালাহ; ৪. মাদ; ৫. তাখফিকে হামযা; ৬. ইদগাম; ৭. ইখফা; ৮. ইকলাব ও ৯. হরফের উচ্চারণ স্থানসমূহ।

১৬. আল কুরআনে কত প্রকার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং তা কী কী?

উত্তরঃ তিন প্রকার। ১. শরীআতের বিধান সংক্রান্ত ইলম; ২. বিতর্ক ও যুক্তি খণ্ডন বিষয়ক শাস্ত্র; ৩. ওয়াজ নসিহাত বিষয়ক শাস্ত্র।

১৭. আল কুরআনে কত জন নবীর নাম এসেছে?

উত্তরঃ ছাব্বিশ জন। (প্রচলিত মতে পঁচিশ জন)

১৮. আল কুরআনে কত জন নবীর নাম এসেছে?

উত্তরঃ ছাব্বিশ জন। (প্রচলিত মতে পঁচিশ জন)

১৯. বিশুদ্ধ মতে লুকমান ও খিযির (আ) কি নবী?

উত্তরঃ নবী না।

২০. আল কুরআনে কতজন ফিরিশতার নাম রয়েছে?

উত্তরঃ ৮ জনের।

২১. কুরআন মজিদে অস্পষ্টরূপে কাদের নাম উল্লেখ রয়েছে?

উত্তরঃ ১. মুমিন (জনৈক মুমিন ব্যক্তি); ২. রাজুলুন (জনৈক ব্যক্তি); ৩. ফাতা (কোন যুবক); ৪. উম্মি মুসা (মুসার জননী); ৫. ইমরাতা ফিরাউন (ফিরাউনের পত্নী); ৬. আবদ (বান্দাহ); ৭. গোলাম ইত্যাদি।

২২. কুরআন মজিদে অস্পষ্টরূপে নাম উল্লেখের কারণ কয়টি ও কী কী?

উত্তরঃ সাতটি। ১. কুরআনে অন্যত্র উহার বিবরণ উল্লেখ থাকায়; ২. প্রসিদ্ধ হওয়ায়; ৩. তার প্রতি অনুগ্রহ বশত তার বিষয়টি গোপন রাখার উদ্দেশ্যে; ৪. যা নির্দিষ্ট করার মধ্যে তেমন কোন উপকারিতা নেই; ৫. বিষয়টি সাধারণ হওয়ার প্রতি সতর্ক করার উদ্দেশ্যে; ৬. নাম ব্যতীত পূর্ণাঙ্গ বিশেষণের সাথে মাহাত্ম্য বর্ণনা করার উদ্দেশ্য; ৭. অপূর্ণ বিশেষণ দ্বারা হীনতা প্রকাশ করার জন্য।

২৩. আল কুরআনের অলৌকিকত্ব প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম কে গ্রন্থ রচনা করেন?

উত্তরঃ আবু উসমান আমর জাহিয।

২৪. তাফসীরের আলোকে কুরআন কত প্রকার ও কী কী?

উত্তরঃ তিন প্রকার- ১. যার বিবরণ শরীআত প্রবর্তক হতে বর্ণিত হয়েছে; ২. যার ব্যাখ্যা সাহাবী অথবা শীর্ষস্থানীয় তাবি'ঈ হতে বর্ণিত; ৩. যার ব্যাখ্যা কোনরূপ উদ্ধৃতি পাওয়া যায় নি।

২৫. সাহাবীদের মধ্যে চারজন ওহি লেখকের নাম কী কী?

উত্তরঃ ১. হযরত যায়েদ ইবনু সাবিত (রা); ২. হযরত ইবনু আব্বাস (রা); ৩. হযরত ইবনু মাসউদ (রা); ৪. হযরত মুয়াবিয়া (রা)।

২৬. আল কুরআনের হুরুফে মুকাত্তায়াত (বিচ্ছিন্ন বর্ণ) কয়টি?

উত্তরঃ ১৪টি।

২৭. আল কুরআনে হুরুফে মুকাত্তায়াত কয়টি স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে?

উত্তরঃ ১৯টি স্থানে।

২৮. আল কুরআনের কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় কী?

উত্তরঃ মানুষ।

২৯. কিয়ামতের দৃশ্য বুঝার জন্যে রাসূল (স) যেসব সূরা পড়ার উপদেশ দিয়েছেন এমন ৩টি সূরার নাম কী?

উত্তরঃ ১. সূরা ইনফিতার; ২. ইনশিকাক ও ৩. তাকভির।

৩০. মাদানী সূরার তিনটি বৈশিষ্ট্য কী কী?

উত্তরঃ ১. রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধান; ২. সামাজিক নিয়ম-নীতি ও ৩. জিহাদের নির্দেশ।

৩১. পবিত্র কুরআন সর্বপ্রথম কোন মাসের কোন রাত্রিতে নাযিল হয়?

উত্তরঃ রমযান মাসের ২৭ তারিখের কদরের রাত্রিতে।

৩২. কোন সূরার কোন আয়াতে রাসূল (স)-কে উত্তম আদর্শ বলে ঘোষণা করা হয়েছে?

উত্তরঃ সূরা আহযাবের ২১ নং আয়াতে।

৩৩. কোন সূরা বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু হয়নি? সেই সূরার অপর নাম কী?

উত্তরঃ সূরা তাওবা, অপর নাম বারায়াত।

৩৪. আল কুরআনে বর্ণিত ইসলামী রাষ্ট্রের ৪টি মৌলিক কাজ কী কী?

উত্তরঃ ১. নামায কায়েম করা; ২. যাকাত আদায় করা; ৩. সৎ কাজে আদেশ দেয়া ও ৪. অসৎ কাজ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখা।

৩৫. এমন একটি তাফসীর গ্রন্থের নাম কী যা বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং যার শিরোনামে তাফসীর শব্দটি নেই?

উত্তরঃ তাফহিমুল কুরআন।

৩৬. আয়াতুল কুরসি কোন সূরার কত নং আয়াত?

উত্তরঃ সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত।

৩৭. আল কুরআনের দৃষ্টিতে পৃথিবীতে মানুষের মর্যাদা কী?

উত্তরঃ খলিফা বা প্রতিনিধি। 

৩৮. আল কুরআনের আয়াত কত প্রকার?

উত্তরঃ ২ প্রকার। যথা- ১. মুহকামাত ও ২. মুতাশাবিহাত।

৩৯. পবিত্র কুরআনে কোন সুরায় কোন নবীকে জাতির পিতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে?

উত্তরঃ সূরা হাচ্ছে, হযরত ইবরাহীম (আ) কে।

৪০. মুসলিম জাতির পিতা কে? এ প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি কোনটি? 

উত্তরঃ হযরত ইবরাহীম (আ) 'মিল্লাতা আবিকুম ইবরাহীম হুয়া সাম্মাকুমুল মুসলিমিন'।

৪১. শানে নুযুল বলতে কী বুঝায়?

উত্তরঃ আল কুরআন নাযিলের প্রেক্ষাপটকে বুঝায়।

৪২. আল কুরআনে বর্ণিত ইসলামী রাষ্ট্রের ৪টি কাজ সংক্রান্ত সূরার নাম ও আয়াতের নং এবং কাজ ৪টি কী কী?

উত্তরঃ সূরার নাম সূরা হজ্ব, আয়াত নং ৪১, কাজ ৪টি হচ্ছে-১. সালাত বা নামায প্রতিষ্ঠা করা; ২. যাকাত প্রদান করা; ৩. সৎ কাজের আদেশ ও ৪. অসৎ কাজের নিষেধ করা।

৪৩. সর্বপ্রথম নাযিলকৃত আয়াত কোনটি?

উত্তরঃ 'ইকরা বিইসমি রাব্বিকাল্লাজি খালাক'।

৪৪. 'রাব্বি জিদনী ইলমা' আয়াতটি কোন সূরার কত নং আয়াত?

উত্তরঃ সূরা ত্বাহা, ১১৪ নং আয়াত। 

৪৫. কোন সূরাকে উম্মুল কুরআন বলা হয়?

উত্তরঃ সূরা ফাতিহাকে।

৪৬. কোন সূরা নাযিল হলে হযরত আবু বকর (রা) কেঁদে ফেলেন?

উত্তরঃ সূরা নাসর। ইযা জায়া নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ.....।

৪৭. আল কুরআনের ভাষায় কোন গুনাহকে 'ভুলমে আযিম' বলা হয়েছে? 

উত্তরঃ শিরককে।

৪৮. আল কুরআনের আলোকে মুমিনের ৫টি গুণ কী কী?

উত্তরঃ ১. বিনয়তার সাথে সালাত আদায় করা; ২. অহেতুক বাক্যালাপ থেকে বিরত থাকা; ৩. যাকাত প্রদান করা; ৪. লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করা ও ৫. আমানত রক্ষা করা।

৪৯. হযরত মুসা (আ) এর নয়টি মুজিযা আল কুরআনের আলোকে কী কী?

উত্তরঃ ১. লাঠি সাপ হওয়া; ২. হাত শ্বেতবর্ণ হওয়া; ৩. শত্রুর উপর বন্যা; ৪. পঙ্গপাল; ৫. উকুন; ৬. ব্যান্ড; ৭. রক্ত বৃষ্টি; ৮. অন্ধকার ও ৯. সমুদ্র দ্বিধাকরণ।

৫০. আল কুরআন প্রকৃত পক্ষে কে প্রথম বাংলায় অনুবাদ করেন? কত সালে?

উত্তরঃ মাওলানা আমির উদ্দিন বাসুনিয়া; ১৯৮১ সালে।

৫১. আল কুরআনের কয়টি সূরার নাম বিষয়ভিত্তিক রাখা হয়েছে? সে সূরাগুলো কী কী?

উত্তরঃ ২টি। ১. সূরা ফাতিহা ও ২. ইখলাস।

৫২. কোন সূরায় মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে? প্রথম আয়াতটি কী?

উত্তরঃ সূরা ফাতাহতে। প্রথম আয়াত 'ইন্না ফাতাহনা লাকা ফাতহাম মুবিনা'।

৫৩. আল কুরআনে উল্লেখিত 'উম্মাতে ওসাত' অর্থ কী? তাদের দায়িত্ব কী?

উত্তরঃ অর্থ উত্তম দল, দায়িত্ব ইকামাতে দ্বীন। (আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা)

৫৪. কোন সূরায় বিসমিল্লাহ দুইবার এসেছে?

উত্তরঃ সূরা নামলে।

৫৫. ইসলামী আন্দোলনের কুরআনের পরিভাষা কী? এর শরয়ী মর্যাদা কী? 

উত্তরঃ ইসলামী আন্দোলন করা ফরয।

৫৬. কুরআনের সূরা ও আয়াত নং কত?

উত্তরঃ জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। সূরা সাফ, আয়াত ১১।

৫৭. রাসূল (স) কে জিহাদের অনুমতি দিয়ে সর্বপ্রথম কোন্ সূরার কত নং আয়াতটি নাযিল হয়?

উত্তরঃ সূরা হাজ্জ্বের ৩৯ নং আয়াতটি।

৫৮. সূরা আল আসর অনুসারে কারা ক্ষতির মধ্যে লিপ্ত? 

উত্তরঃ অবিশ্বাসীরা।

৫৯. কত বছর ধরে আল কুরআন নাযিল হয়?

উত্তরঃ সুদীর্ঘ ২৩ বছর ধরে।

৬০. আল কুরআনের বাণী রাসূল (স) এর কাছে কে নিয়ে আসতেন?

উত্তরঃ হযরত জিবরাইল (আ)।

৬১. সম্পূর্ণ কুরআন কোন রাতে অবতীর্ণ হয়? 

উত্তরঃ মহিমান্বিত কদরের রাতে।

৬২. কুরআন শরীফের সূরাগুলো নাযিল হওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ অবস্থা ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত।

৬৩. আল কুরআন কোন ভাষায় নাযিল হয়? 

উত্তরঃ আরবী ভাষায়।

৬৪. আল কুরআন আরবী ভাষার নাযিল হওয়ার কারণ কী? 

উত্তরঃ মহানবীর (স) এর ভাষা আরবী ছিল বিধায়।

৬৫. কুরআন শরীফকে সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ যেহেতু ইহা দৈনিক ৫ বার নামাযে পড়া হয়।

৬৬. কোন আসমানী কিতাব শেষ নবুওয়াতের প্রতি সাক্ষ্য হিসেবে চিরদিন স্থায়ী থাকবে?

উত্তরঃ আল কুরআন।

৬৭. ইসলামী জীবন-বিধানের প্রধান উৎস কোনটি?

উত্তরঃ আল কুরআন।

৬৮. আল কুরআনে মোট কয়টি সূরা আছে?

উত্তরঃ ১১৪ টি।

৬৯. আল কুরআনে মোট কতটি আয়াত আছে?

উত্তরঃ ৬৬৬৬ টি (প্রচলিত মতে), ৬২৩৬ টি (বিশুদ্ধ মতে)।

৭০. বিসমিল্লাহ সহ আল কুরআনের আয়াত সংখ্যা কতটি?

উত্তরঃ ছয় হাজার তিন শত উনপঞ্চাশটি (৬৩৪৯)।

৭১. মাক্কী ও মাদানী সূরা কতটি?

উত্তরঃ মাক্কী ৮৪ টি, মাদানী ৩০ টি।

৭২. মাক্কী ও মাদানী সূরার আয়াত কতটি?

উত্তরঃ মাক্কী ৪৬০২ টি এবং মাদানী ১৬৩৪ টি।

৭৩. মক্কা ও মদিনায় সূরা অবতীর্ণের সময় কত?

উত্তরঃ মক্কায় ১২ বছর ৫ মাস ২১ দিন এবং মদিনায় ১০ বছর ৬ মাস ৯ দিন।

৭৪. আল কুরআনে কতটি রুকু আছে?

উত্তরঃ পাঁচশত চুয়ান্নটি (৫৫৪)।

৭৫. আল কুরআনে মোট কতটি শব্দ আছে?

উত্তরঃ ছিয়শি হাজার চারশত ত্রিশটি (৮৬,৪৩০)।

৭৬. আল কুরআনে মোট কতটি অক্ষর আছে?

উত্তরঃ বত্রিশ লাখ বার হাজার ছয়শ সত্তরটি (৩২,১২,৬৭০)।

৭৭. আল কুরআনে মনযিল কতটি?

উত্তরঃ ৭ টি।

৭৮. আল কুরআনকে মোট কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে? ভাগগুলোকে কী বলে?

উত্তরঃ ত্রিশ ভাগে, প্রত্যেক ভাগকে পারা বলে।

৭৯. কার আদেশে আল কুরআনকে ৩০ ভাগে ভাগ করা হয়?

উত্তরঃ হযরত হাজ্জাজ বিন ইউসুফের আদেশে।

৮০. আল কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা কোনটি?

উত্তরঃ সূরা আল বাকারা।

৮১. আল কুরআনের সবচেয়ে ছোট সূরা কোনটি?

উত্তরঃ সূরা আল কাউসার।

৮২. সর্বপ্রথম কোন সূরা নাযিল হয়?

উত্তরঃ সূরা আল আলাক।

৮৩. আল কুরআনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা কোনটি?

উত্তরঃ সূরা আল ফাতিহা।

৮৪. সর্বশেষ কোন সূরা নাযিল হয়?

উত্তরঃ সূরা আন নাসর।

৮৫. আল কুরআনের সবচেয়ে বড় শব্দ কোনটি?

উত্তরঃ ফাআছকাইনাকুমুহ লা-ইয়াস্তাখলিফান্নাহুম।

৮৬. আল কুরআনের সর্ববৃহৎ আয়াত কোনটি?

উত্তরঃ সূরা আল বাকারার ২৮২ নং আয়াতটি।

৮৭. আল কুরআনের সূরাগুলো কয় ভাগে বিভক্ত এবং কী কী?

উত্তরঃ দুইভাগে। মাক্কী ও মাদানী।

৮৮. মাক্কী সূরা কাকে বলে?

উত্তরঃ মহানবী (স) এর মক্কা জীবনে দীর্ঘ তের বছর ধরে যে সকল সূরা নাযিল হয়, তাকে মাক্কী সূরা বলে।

৮৯. মাদানী সূরা কাকে বলে?

উত্তরঃ মহানবী (স) এর মদীনা জীবনে যে সকল সূরা নাযিল হয়, তাকে মাদানী সূরা বলে।

৯০. মাক্কী সূরার বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তরঃ আল্লাহর একত্ববাদ, অংশীবাদ, ইহকাল, পরকাল, পাপ-পুণ্য সম্পর্কীয় বিধি-বিধান।

৯১. মাদানী সূরার বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তরঃ ইসলামী রাষ্ট্রের বুনিয়াদ, যেমন- ফৌজদারী আইন, উত্তরাধিকার আইন, বিবাহ, তালাক, যাকাত, অর্থনীতি ও সমাজনীতি ইত্যাদি।

৯২. মূল কুরআন কী রকম ছিল?

উত্তরঃ মূল কুরআনে অক্ষরের উপরে বা নিচে কোন চিহ্ন ছিল না। অনারবদের পড়ার সুবিধার জন্য যের, যবর, পেশ, তাশদিদ ইত্যাদি চিহ্নের প্রচলন করা হয়।

৯৩. প্রথম যুগে আল কুরআন কিভাবে সংরক্ষিত হয়?

উত্তরঃ মুখস্থ করে।

৯৪. যারা আল কুরআন মুখস্থ করে তাদেরকে কী বলে?

উত্তরঃ হাফিয।

৯৫. কে কখন কিভাবে আল কুরআন সংরক্ষণ করেন?

উত্তরঃ খলিফা হযরত ওসমান (রা) এর মৃত্যুর পর সমগ্র কুরআন লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণ করেন।

৯৬. কোন বিদেশী লেখক আল কুরআনকে ঈশ্বর প্রেরিত বাণী বলে নিঃসন্দিহান হয়েছেন?

উত্তরঃ ফরাসি লেখক ড. মরিস বুকাইলী।

৯৭. তাউয কাকে বলে?

উত্তরঃ অভিশপ্ত শয়তানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা হয় তাকে তাউয বলে। (আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম) এটা আল কুরআনের অংশ নয়।

৯৮. তাসমিয়াহ বা আল কুরআনের তাজ কী?

উত্তরঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। এটাই তাসমিয়াহ বা আল কুরআনের তাজ।

৯৯. প্রধান ওহি লেখক কে?

উত্তরঃ হযরত যায়েদ বিন সাবিত (রা)।

১০০. কার পরামর্শক্রমে আল কুরআন সংরক্ষণ শুরু হয়?

উত্তরঃ হযরত উমর (রা) এর।

১০১. আল কুরআনের প্রামাণ্য পাণ্ডুলিপি পুনরায় লেখার দারিত্ব কার উপর অর্পিত হয়?

উত্তরঃ হযরত যায়েদ বিন সাবিত (রা) এর উপর।

১০২. পুস্তকাকারে লিপিবদ্ধ কুরআন সর্বপ্রথম কার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়?

উত্তরঃ হযরত আবু বকর (রা) এর তত্ত্বাবধানে।

১০৩. কে আল কুরআনের একটি কপি নকল করালেন?

উত্তরঃ হযরত আবু বকর (রা)।

১০৪. দ্বিতীয় খলিফা তাঁর জীবন সায়াহ্নের পূর্বে আল কুরআনের পাণ্ডুলিপি কার কাছে রেখে যান?

উত্তরঃ হযরত হাফসা (রা) এর কাছে।

১০৫. কুরআন শরীফের গঠন পদ্ধতির বিভিন্নতা দেখে কে আতংকিত হন?

উত্তরঃ হযরত উসমান (রা)।

১০৬. কার খিলাফতকালে প্রকৃত কুরআন শরীফের আটটি কপি করা হয়?

উত্তরঃ হযরত উসমান (রা) এর আমলে।

১০৭. সংরক্ষিত আল কুরআন প্রতিলিপি প্রচারের জন্য কোথায় কোথায় প্রেরণ করা হয়?

উত্তরঃ বিভিন্ন ইসলামী শাসন কেন্দ্রে।

১০৮. বিশুদ্ধ কুরআন শরীফ কার তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত হয়?

উত্তরঃ হযরত উসমান (রা) এর তত্ত্বাবধানে।

১০৯. আল কুরআনে কিয়াস সম্পর্কে আল্লাহ কী বলেছেন?

উত্তরঃ 'তোমরা গভীর চিন্ত-ভাবনা ও প্রজ্ঞা অবলম্বন কর।'

১১০. মানব জাতির একমাত্র ও শেষ দিশারী কী?

উত্তরঃ আল কুরআন।

১১১. মানুষের মধ্যে কোন ব্যক্তি উত্তম?

উত্তরঃ যে নিজে কুরআন শিখে ও অন্যকে শিখায়।

১১২. আল্লাহ তাআলা সূরা আল আসরের মধ্যে কয়টি উপদেশের কথা বলেছেন?

উত্তরঃ ৬টি।

১১৩. সূরা আল বাকারায় কতটি আয়াত ও রুকু আছে?

উত্তরঃ ২৮৬ টি আয়াত ও ৪০ টি রুকু আছে।

১১৪. কুরআন শরীফের যে সব আয়াতের ভাবার্থ আল্লাহ ছাড়া কেউ বোঝে না, বোঝা সম্ভব নয়, আল কুরআনের ভাষায় সেসব আয়াতকে কী বলা হয়?

উত্তরঃ মুতাশাবিহাত আয়াত।

১১৫. পূর্বের নবীগণের যুগের কতজন কাফিরের নাম কুরআনে উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ ছয়জনের- ১. আর; ২. যালুত; ৩. ফিরাউন; ৪. হামান; ৫. কারন ও ৬. ছামেরী।

১১৬. পাখা বিশিষ্ট কোন কোন প্রাণীর নাম আল কুরআনে উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ দশটি প্রাণীর নাম। যথা- ১. মশা; ২. কাক, ৩. টিডি; ৪. মৌমাছি; ৫. বটের; ৭. হুদ হুদ; ৬. পিপিলিকা; ৮. মাছি; ৯. ফড়িং।

১১৭. আল কুরআনের আলোচ্য বিষয় কয়টি ও কী কী?

উত্তরঃ ৫ টি। যথা- ১. বিধি-বিধান ও সংবিধান জ্ঞান; ২. বিতর্ক জাতীয় জ্ঞান; ৩. আল্লাহর অনুগ্রহের অবগতি সম্পর্কিত জ্ঞান; ৪. আল্লাহ প্রদত্ত বিজয় দিবস তথা সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয় সংক্রান্ত রহস্য তত্ত্ব এবং ৫. মৃত্যু ও মৃত্যুর পরবর্তী বিষয় সংক্রান্ত জ্ঞান।


পরিশেষেঃ 

প্রিয় পাঠক আলোচনার পরিশেষে এসে বলা যায় যে, আজকের আর্টিকেলটি অনেক বড় হয়ে যাওয়ার কারণে একটি আর্টিকেলের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে পর্বভিত্তিকভাবে পবিত্র আল কুরআনের বাকি তথ্যগুলো তুলে ধরা হবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি একজন ইসলাম ধর্মের প্রচারক হয়ে থাকেন তাহলে আমার আর্টিকেলটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শেয়ার করে অন্যান্য মুসলিম ভাইদের পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। "বেসিক ইসলাম এডুকেশন" এর সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url